শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ চকরিয়ায় কিশোরকে ছুরিকাঘাত : আটক ৪ চকরিয়ায় ফেরিওয়ালার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করলেন তাহসান

নিজস্ব প্রতিবেদক : বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুতির হার সারা বিশ্বে বছরের পর বছর ধরে বেড়েই চলছে। কভিড-১৯ মহামারিতেও ২০২০ সাল শেষে সারা বিশ্বে যুদ্ধ, সহিংসতা, নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে পালিয়ে বেড়ানো গৃহহীন মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮ কোটি ২৪ লাখে এসে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ মানুষ নিজ দেশের ভেতরে আভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হলেও সারা বিশ্বজুড়ে প্রায় দুই কোটির বেশি মানুষ দেশে ছেড়েছে। এবং সংঘাত ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নিজ দেশ ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই দুই কোটি মানুষের প্রায় ৫ শতাংশ মানুষ আজ বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের উদারতার কারণে আশ্রয় পেয়েছে। এমনটিই জানানো হয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজকের এই বিশ্ব শরণার্থী দিবসে আমরা মুগ্ধ হই শরণার্থীদের অদম্য প্রত্যয় দেখে, বিশেষ করে এই চলমান বৈশ্বিক মহামারিতেও। শরণার্থীরা সাধারণ পরিস্থিতিতেই অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। তবে গত এক বছর তাদের জন্য ছিল আরো অনেক কষ্টকর এবং বিভিন্ন নতুন প্রতিবন্ধকতায় পূর্ণ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কভিড-১৯ এর টিকার মতো মৌলিক কিছু সেবার অপ্রাপ্তি।

এই বছরের বিশ্ব শরণার্থী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘সুস্থ হই একসাথে, শিখি আর আলো ছড়াই’। এই দিনটি উদযাপন করতে ইউএনএইচসিআরের বাংলাদেশে নিযুক্ত শুভেচ্ছাদূত জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খান কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন এবং রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে তাদের জীবন সম্পর্কে জানতে পারেন।

কভিড-১৯ মহামারির শুরু থেকেই কক্সবাজার জেলায় গড়ে তোলা বিভিন্ন করোনা চিকিৎসা কেন্দ্রে রোহিঙ্গারা ও স্থানীয় বাংলাদেশি জনগণ সমানভাবে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হচ্ছেন। আজকের শরণার্থী দিবসে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ইউএনএইচসিআরের সহায়তায় নির্মিত প্রথম আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র)-এর এক বছর পূর্ণ হয়েছে। গত এক বছরে এই আইসিইউ-তে মোট ছয়শ ষাটেরও বেশি বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এই আইসিইউ’র রোগীদের ডায়াগনস্টিক সেবা দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টাব্যাপী একটি ল্যাবরেটরি উদ্বোধন করেন আজ তাহসান খান।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তাহসান বলেন, ‘এই আইসিইউটি কক্সবাজারের প্রথম। শুধু এক বছরেই এটি অনেকের জীবন বাঁচিয়েছে। আজকের এই ল্যাবরেটরি সেবা যোগ করার মাধ্যমে আরো অনেক রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় জনগণের জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা নিশ্চিত করা যাবে। এটি সারা বিশ্বের জন্যই একটি দারুণ উদাহরণ।’

জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার বলছে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বকে দেখিয়েছে এক ইতিবাচক দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রায় ৪ বছর ধরে শুধু আশ্রয়ই দেয়নি, এর সাথে জাতীয় কভিড-১৯ কার্যক্রম ও টিকাদান কর্মসূচিতেও তাদের যুক্ত করা হয়েছে। যেহেতু এখনও পর্যন্ত কোন রোহিঙ্গাকে কভিড-১৯-এর টিকা দেওয়া সম্ভব হয়নি, তাই আমরা আহ্বান জানাই যেন কোভ্যাক্স-এর টিকা বাংলাদেশে আসার সাথে সাথেই রোহিঙ্গাদের ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকা স্থানীয় বাংলাদেশিদের এই টিকাদান কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কভিড-১৯ মহামারি সারা পৃথিবীতে শিক্ষা ও পাঠদানকে তীব্রভাবে ব্যাহত করেছে, আর বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। স্কুল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং লার্নিং সেন্টার গুলো ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকেই বন্ধ রয়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রায় ৫২ শতাংশের বয়স হচ্ছে ১৮’র নিচে, আর এর প্রভাবও দীর্ঘমেয়াদী। আমাদের একসাথে কাজ করে যেতে হবে যেন রোহিঙ্গা শিশুদের শেখা চালু থাকে এবং ধীরে ধীরে যেন লার্নিং সেন্টারগুলো খোলা যায়। এভাবেই আমরা নিশ্চিত করতে পারবো যেন রোহিঙ্গা শিশুদের প্রজন্মটি শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, রোহিঙ্গা ও আমরা সবাই চাই আলো ছড়াতে আর নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে। রোহিঙ্গারাও এর চেয়ে কোনোভাবেই ব্যাতিক্রম নয়। সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে রোহিঙ্গারা খেলাধুলা, শিল্প, সংগীত ও বিভিন্ন সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে তাদের প্রতিভার প্রমাণ রাখছে, আর এভাবে তারা তাদের সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখছে। খেলাধুলা আর শিল্প শুধুমাত্র প্রতিভার বিকাশই ঘটায় না, এর সাথে সাথে এর মাধ্যমে আমরা সুস্থ এবং এর মাধ্যমে দুটি জনগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে একটি সংযোগ স্থাপন করা যায়। পরিদর্শনকালে আমাদের শুভেচ্ছাদূত তাহসান রোহিঙ্গা মিউজিশিয়ান এবং ফিল্মমেকারদের সাথে দেখা করেন, তাদের সাথে কথা বলেন এবং তারা একসাথে একটি গান।

তাহসান বলেন, ‘তরুণ রোহিঙ্গাদের তৈরি “ওমর’স ফিল্ম স্কুল”র তরুণ ফিল্মমেকাররা এবং এর পাশাপাশি মেধাবী রোহিঙ্গা মিউজিশিয়ানরা অসাধারণ কাজ করছে। তারা গান, মিউজিক, ফটোগ্রাফি এবং ফিল্মের মাধ্যমে নিজস্ব সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য তুলে ধরছে। কভিড-১৯ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে তারা অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা অসাধারণ’।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888